করতোয়া নদী রাজশাহী বিভাগের অন্তর্গত একটি ছোট নদী যা একসময় একটি বড় ও পবিত্র নদী ছিল। এর একটি গতিপথ বর্তমানে বগুড়া জেলার মহাস্থানগড় দিয়ে (যা পুণ্ড্রনগর নামে পরিচিত ও প্রাচীন পুন্ডবর্ধন নগরীর রাজধানী) প্রবাহমান। করতোয়া মাহাত্ম্য এর অতীত ঐতিহ্যের প্রমাণ করে। মহাভারতে বলা আছে যে, তিনদিন উপবাসের পর করতোয়া নদীতে ভ্রমণ করা অশ্বমেধা (ঘোড়া বলিদান) এর সমান পূণ্যের সমান। আরেকটি প্রাচীন শহর শ্রাবস্তী, খুব সম্ভবত মহাস্থানগড়ের উত্তরে করতোয়ার পাড়ে অবস্থিত ছিল। অবশ্য শ্রাবস্তীর সম্ভাব্য অবস্থান নিয়ে বিতর্ক আছে।
বাংলা ও এর নিকটবর্তী এলাকার নদীপথের ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে ১৫০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে। উপযুক্ত প্রমাণাদি না থাকলেও সূদুর অতীতেও এমন পরিবর্তন ঘটেছে। করতোয়া নদীর পরিবর্তন বহুবছর ধরে সংঘটিত হয়েছে।
ডানপাশের মানচিত্রটি উত্তর বঙ্গের প্রধান নদী ও এর নিকটবর্তী স্থানসমূহকে প্রদর্শন করে। অপ্রদর্শিত অসংখ্য শাখা ও প্রশাখা প্রধান নদীতে এসে মিশেছে এবং প্রধান নদীর গতিপথের পরিবর্তন এনেছে। নদী-পদ্ধতির নানা পরিবর্তন ক্রমশ সংঘটিত হয়। এছাড়াও অনেক নদীর শাখাগুলো স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন নামে পরিচিত, যা নদী পদ্ধতিটিকে আরো জটিল করে তোলে।
টেকটোনিক অসহনশীলতার কারণে করতোয়া নদী চারটি আলাদা ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। উত্তরের অংশটি যার নাম দিনাজপুর-করতোয়া হল আত্রাই নদীর প্রধান উত্স। এটির উত্পন্ন হয়েছে জলপাইগুড়ি জেলার বৈকণ্ঠপুরের একটি জলাধার থেকে এবং মাটির নিচের স্ট্রিম থেকেও পানি গ্রহণ করে। খানসামা উপজেলাতে এটি নাম বদলে আত্রাই হয়ে যায়। দ্বিতীয় শাখার ক্ষেত্রে, দিনাজপুর-করতোয়া খানসামার উত্তরে রংপুর-করতোয়ার সাথে মিশে যায়, অবশ্য এই গতিপথে বর্তমানে খুব সামান্য পরিমাণ পানি প্রবাহিত হয়। রংপুর-করতোয়ার উপরের অংশ জলপাইগুড়ি জেলায় উত্পন্ন হয়েছে এবং এটি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পর্যন্ত দিওনাই-যমুনেশ্বরী নামে পরিচিত। তৃতীয় শাখা, যমুনেশ্বরী-করতোয়া গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বের দিকে প্রবাহিত হয় এবং প্রধান গতিপথটি কাটাখালি হয়ে বাঙ্গালি নদিতে গিয়ে পড়ে। প্রাক্তন নদীর একটি অংশ শিবগঞ্জ উপজেলার ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয় এবং এর বেশির ভাগ অংশ বর্তমানে প্রায় সারাবছর শুষ্ক থাকে। এটি কার্যকরভাবে রংপুর-করতোয়াকে বগুড়া-করতোয়া থেকে পৃথক করে, এবং বগুড়ার দক্ষিণ দিকে থেকে প্রবাহিত হয়ে বাঙালির সাথে মিশে ফুলঝুর নদী নামে হুরাসাগরে গিয়ে পড়ে। চতুর্থ অংশ পাবনা-করতোয়া হান্দিয়াল নিকটবর্তী একটি মৃত নদীগর্ভ। অন্যান্য অনেক চ্যানেলও পুরাতন করতোয়ার অংশ হিসেবে বিবেচিত।.
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস